পরিচয় দেন বাংলা সিনেমার নায়িকা। যদিও মূল চরিত্রে কখনো দেখা যায়নি। অনেকে দেখলে হয়তো চিনবেনই না। প্রধান শখ, বিয়ে করা। উদ্দেশ্য বিনোদন ও প্রতারণা। হাতিয়ার তার মামলা ও দেনমোহর। এটা সিনেমা জগতের নায়িকার কথা না; বলছি বাস্তবের এক খলনায়িকার কথা।
কিছু কিছু সিনেমায় তাকে পার্শ্বচরিত্রে দেখা গেলেও সেই পরিচয় ভাঙিয়ে ফায়দা লুটে যাওয়াই তার কাজ। সরব সোশ্যাল মিডিয়ায়ও। নিত্য নতুন ছবি আপলোড করেন নানা তারকার সঙ্গে। আর তা দেখেই তার পেছনে জড়ো হয় ভক্ত শ্রেণি। চালিয়ে যান ইনবক্সে যোগাযোগ। নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন নানা পুরুষের সঙ্গে। একটা সময় বিয়েও করে ফেলেন। সেখানে উচ্চ দেনমোহর ধার্য করা তার মূল উদ্দেশ্য।
এরপরই শুরু করেন আসল খেলা। সংসারে নানা গণ্ডগোল বাধিয়ে স্বামীর নামে ঠুকে দেন মামলা। এরপর দেনমোহর আদায় করে নামেন নতুন মিশনে। জেলায় জেলায় বিয়ে করা সেই পাত্রীর নাম ছোলেমা খাতুন ওরফে সাদিয়া আক্তার তমা। নিউজ টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত তার বিবাহিত স্বামী পাওয়া গেছে ২০ জন। তবে স্বামীর মতো সময় পার করা অবিবাহিত বন্ধুও তার আছে কয়েক ডজন।
তার দ্বিতীয় স্বামী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ”আমরা বিয়ে করি ২০০৯ সালে। ২০১৩ সাল থেকে মাঝেমধ্যেই সে উধাও হয়ে যেত। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে এ পর্যন্ত বিয়ে করেছে অন্তত ২০টা। আমার পুরো বাসা-বাড়ির সবকিছু নিয়ে সে চলে গেছে।”
বেশিরভাগ বিয়েতে তমা নিজেকে কুমারী বলে দাবি করেছেন। আর সেইসব বিয়েতে দেনমোহর তিন লক্ষ টাকা থেকে আট লক্ষ টাকা পর্যন্ত লিখিয়েছেন।
তমার বিয়ে সম্পন্ন করা একজন রেজিস্ট্রার কাজী মোশাররফ হোসেন বলেন, ২০১৫ সালের ২৫ মার্চে তার একটা বিয়ে হয়েছে গাজীপুরে। ছেলের নাম শামছুজ্জামান সুজন। তাকে তালাক দেওয়ার পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল আব্দুর রহমান মিঠুর তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। প্রথম বিয়ের দেনমোহর ছিল দুই লাখ টাকা। দ্বিতীয় বিয়ের দেনমোহর ছিল আট লাখ টাকা।
অর্থাৎ, দুইটা বিয়ের মধ্যে সময়ের পার্থক্য মাত্র একবছর ১৫ দিন।
অপর এক নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. নুর হোসেন বলেন, সাদিয়া আক্তার তমা ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সুজনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন তিনি নিজেকে কুমারী বলেই পরিচয় দেন।
অর্থাৎ, এই বিয়ের তিন মাস ১১ দিনের মাথায় তিনি ফের বিয়ে করেন ২৫ মার্চ।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে তমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কয়েকজন তাকে স্ত্রী বলে দাবি করেছেন এবং তিনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন- এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তমা বলেন, ”এমন কোন বিষয় আমার জানা নেই। আমি আপনাকে কিছুক্ষণ পরে ফোন দিচ্ছি।”
এরপরই বন্ধ হয়ে যায় তমার মুঠোফোন নম্বর।
ভিডিও প্রতিবেদনে সাদিয়া আক্তার তমার প্রতারণার আদ্যোপান্ত জানাচ্ছেন মির্জা রুমন, ক্যামেরায় ছিলেন মুরাদ আক্তার।
Post a Comment