এরপর হয়তো কিছুটা অনুতপ্ত হয়ে অর্টিজ ছুরিটা এবার চালিয়ে দিলেন নিজের কবজিতে। রক্ত ক্ষরণ হলো, কিন্তু মাথায় অন্য চিন্তা এল এবার। মাতেওর লাশ ময়লার ব্যাগে পুরে স্ত্রীকে জানাবেন চিন্তা করলেন। স্ত্রীকে ফোনে না পেয়ে স্ত্রীর বোনকে ফোন করলেন। বললেন, ‘মাতেও আর নেই।’ শুনে আত্মীয়রা ঝড়ের বেগে সেখানে এলে ঘটনা দেখে শোকবিহ্বল যাকে বলে। ৯১১ নম্বরে ফোন করে পুলিশ ডাকলেন তারা। এরই মধ্যে অর্টিজ পালিয়ে গেলেন। গাড়ি বের করে ছুটলেন মেক্সিকো সীমান্তের দিকে। এফবিআই ও শিকাগো পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৬০ মাইল দূরে ক্যাঙ্কাকির একটি ট্রাফিক সিগন্যালে আসামিকে আটক করল।
ছোট্ট শিশুটির হত্যাকারীকে আটকের খবর সাংবাদিকদের জানাতে শিকাগো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পুলিশ সুপার এডি জনসন যেন আবেগী হয়ে উঠলেন। এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, মাতেওর হত্যা এককথায় নৃশংস ও ভয়ংকর। অবুঝ শিশু মাতেওর আদর ও প্রশ্রয় পাওয়াই ছিল যথার্থ অধিকার। নিরাপত্তার বিশ্বাসে যার কোলে নির্ভার থাকতে শিখে গিয়েছিল এই ছোট্ট বয়সেই, সেটি নিশ্চিতরূপে তার বাবা-মা।
পুলিশ কর্মকর্তা জনসন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা পুলিশ হয়েও আমাদের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো উদ্বেগ তৈরি করে। কারণ আমাদেরও ছোট শিশু আছে। আমাদের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এমন হলে আমরা যা যা করতাম, মাতেওর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা ঠিক সেটাই করব।’
মাতেওর আরও ছয় ভাই বোন রয়েছে। তারা ভাইকে খুন হতে দেখে এখন ভীত-সন্ত্রস্ত। বাচ্চাটির বাবা হঠাৎ হত্যা করার মতো এতটা চটে গেলেন কেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সে মানসিক উন্মাদ নয় বলেই পুলিশ ধারণা করছে। অ্যালকোহল বা ড্রাগসের ঘটনাও ঘটেনি বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে।
অর্টিজের জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শিকাগো পুলিশের তথ্যমতে, শিকাগোতে গত এক বছর খুনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। ২০১৮ সালেই এ পর্যন্ত ৭০ জন খুন হয়েছে। শিকাগো ট্রিবিউনের গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৭ সালে শিকাগোতে ৬৭৪ জন খুন হয়। পরিসংখ্যানের হিসেবে দৈনিক দুজন করে খুন হচ্ছে শহরটিতে। ২০১৬ সালে শহরটিতে ৮০০ জন খুন হয়।
Post a Comment